WHAT IS BLACK FUNGUS AND WHY INDIA IS AT GREAT RISK TC SR
Black Fungus: কী এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস? কী ভাবে এটি কোভিডকালে দেশে গণমৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে?
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস মাটি এবং পচা পাতার মতো ক্ষয়কারী জৈব পদার্থের মধ্যে পাওয়া একটি ছত্রাক।
Black Fungus: কী এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস? কী ভাবে এটি কোভিডকালে দেশে গণমৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে?
#নয়াদিল্লি: করোনা মহামারীর মধ্যেই নতুন বিপত্তি মিউকরমাইকোসিস (Mucormycosis) বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus)। বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে এই ছত্রাকের সংক্রমণ। ফলে নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে এই ছত্রাকবাহিত রোগ। যা বিরল কিন্তু সাংঘাতিক। এটি মিউকরমাইসিটিস ছত্রাক থেকে হয়। এটি মৃত্তিকা এবং পচা পাতার মতো ক্ষয়কারী জৈব পদার্থের মধ্যে পাওয়া একটি ছত্রাক। এই বিরল সংক্রমণটি সাধারণত মাটি, গাছপালা, সার বা পচনশীল ফল ও সব্জির মধ্যে যে শ্লেষ্মা থাকে, তার থেকেই ছড়ায়। মানুষের দেহে সাইনাস, মস্তিষ্ক ও ফুসফুসকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এই সংক্রমণ। যাঁরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যাঁদের করোনা হয়েছে, যাঁদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যাঁরা ক্যানসার, এইচআইভি, এইডস-এ আক্রান্ত, সেই সব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ প্রাণহানিকর হয়ে উঠতে পারে।
কী এই ছত্রাক?
ইউএস সেন্টারস অফ ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (US Centers for Disease Control and Prevention) বা সিডিসি অনুসারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস মাটি এবং পচা পাতার মতো ক্ষয়কারী জৈব পদার্থের মধ্যে পাওয়া একটি ছত্রাক। শরীর দুর্বল হলে মূলত আক্রমণ করে এই ছত্রাক। এছাড়াও করোনা আক্রান্ত রোগীরা বেশি দিন আইসিইউ-তে থাকলে এবং তাঁদের উপরে স্টেরয়েডের ব্যবহার বেশি হলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এমন ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সহজেই ঢুকে পড়ে শরীরে। এছাড়াও ময়লা জলযুক্ত অক্সিজেন ট্যাঙ্কগুলির ব্যবহারের মাধ্যমেও হাসপাতাল এবং বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে এই ছত্রাক।
কতটা বিপজ্জনক এটি?
ভয়াবহ এই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে খুব শীঘ্রই রোগ নির্ণয় করা উচিত। এটি মস্তিষ্কের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আগেই রোগীদের নাক, চোখ বা এমনকি তাদের চোয়াল অপারেশন করে বাদ দিতে হতে পারে। সিডিসি (CDC) অনুসারে, এই রোগে গড় প্রাণহানির হার ৫৪ শতাংশ। এই রোগে আক্রান্ত হলে কয়েক দিনের মধ্যেই মানুষ মারা যেতে পারে, তবে এটি সংক্রামক নয় সিডিসির মতে। ভারতে সাধারণত বছরে বেশ কিছু মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে সাধারণত ডায়াবিটিস রোগীরা এবং ক্যানসার-আক্রান্তরা সমস্যায় পড়ছেন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হলে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে মূলত তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন, যাঁদের দীর্ঘদিন রোগভোগের জেরে শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। শরীরের কোনও অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে, ক্যানসার রয়েছে এই ধরণের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি রয়েছে। দীর্ঘ দিন ভেন্টিলেটরে রয়েছেন যাঁরা তাঁদের ক্ষেত্রেও রয়েছে যথেষ্ট আশঙ্কা। এমনকি স্টেরয়েডের ভুল ব্যবহারের জেরে তৈরি হতে পারে সংক্রমণের আশঙ্কা।
করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য কেন এটি বিপজ্জনক?
করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বিপদজনক কারণ করোনা রোগীর চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহারের কারণে অনেক সময়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। যার জেরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সেই রোগীর শরীরে বাসা বাধার সহজেই সুযোগ পাচ্ছে। করোনা রোগীরা যখন বেশ কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছেন, সে সময়ে নতুন এই সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তাই করোনা-চিকিৎসায় স্টেরয়েড কম ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আর কী কারণ আছে এই সংক্রমণের ?
ডায়াবেটিস রোগীদের- যাঁদের রক্তপ্রবাহে অতিরিক্ত চিনির পরিমাণ রয়েছে তাদেরও ঝুঁকি বেশি। উল্লেখ্য যে ভারতে ডায়াবেটিসের হার বেশি। কিছু হাসপাতালে এবং চিকিৎসক স্টেরয়েডগুলি অত্যধিক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে চলেছেন এবং কিছু লোক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অতিরিক্ত পরিমাণে এগুলি বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। ভারতের জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের প্রফেসর কে শ্রীনাথ রেড্ডি (K srinath reddy) বলেছেন, “মানুষ মাত্রাতিরিক্ত এবং অনুপযুক্তভাবে স্টেরয়েড ব্যবহার শুরু করেছেন।”
বর্তমানে কত সংক্রমণ আছে?
হিন্দুস্তান টাইমস অনুসারে বর্তমানে ভারতে কমপক্ষে ৭,২৫০টি এই রোগে আক্রান্তের খবর রয়েছে।মহারাষ্ট্রে এখন ২ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাতে প্রায় ১,২০০ জন রয়েছেন ।কমপক্ষে নয়টি রাজ্য এখন এই সংক্রমণকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করেছে। বেশ কয়েকটি শহর হাসপাতালে বিশেষ ওয়ার্ড খুলেছে। কতজন মানুষ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কারণে মারা গিয়েছে, তা সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। হিন্দুস্তান টাইমসের মতে, কমপক্ষে ২১৯ জন মারা গিয়েছেন।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হলে অবিলম্বে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ওষুধ বন্ধ করে দিতে হবে। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ছত্রাক-প্রতিরোধী ওষুধ খাওয়া যাবে না এবং সিটি স্ক্যান, নাকের এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে রোগীর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এছাড়াও দরকারে শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে গুরুতর সংক্রমিত এলাকা বাদ দিতে হবে।
2,937 total views, 2 views today